1. live@nccbangla.com : NCC BANGLA : NCC BANGLA
  2. info@www.nccbangla.com : NCC BANGLA :
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন

সিজারের সময় পেটে ১৮ ইঞ্চি কাপড় রেখেই সেলাই, সংকটাপন্ন প্রসূতি

হোসাইন চৌধুরী
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫
  • ১১৩ বার পড়া হয়েছে

নরসিংদীতে মোসা. লিমা আক্তার (২৮) নামের এক প্রসূতির সিজারের সময় পেটের ভেতর ১৮ ইঞ্চির টুকরো মব কাপড় রেখেই সেলাই করে দিয়েছেন এক চিকিৎসক। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই নরসিংদীর সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

প্রসূতি লিমা আক্তার নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের দত্তেরগাঁও মির্জাকান্দি এলাকার রহিম মিয়ার স্ত্রী। লিমা আক্তার বর্তমানে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রসব ব্যথা ওঠার পর গত ১৭ জুন লিমা আক্তারকে নরসিংদী পৌর এলাকার বাসাইল এলাকায় অবস্থিত নরসিংদী সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন বিকেলে তাঁকে সিজারিয়ান অপারেশন করেন হাসপাতালটির চিকিৎসক শিউলি আক্তার। এ সময় লিমা এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। এরপর ২১ জুন দুপুরে লিমা আক্তারকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বাড়ি ফেরার পর তিনি পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। এ ঘটনার পর সিটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রতন মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেন ভুক্তভোগী নারীর ভাই জহিরুল ইসলাম।

এ অবস্থায় ২৫ জুন ভুক্তভোগী নারীকে পুনরায় একই হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। সেখানে কিছুই ধরা পড়েনি। পরে তাঁকে নরসিংদীর অপর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক লিমা আক্তারকে দ্রুত ঢাকার হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন এবং তাঁর পেটে একটা কিছু রয়েছে বলে ধারণা দেন।

এদিকে পরামর্শ অনুযায়ী স্বজনেরা রোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। সেখানে পর্যাপ্ত সেবা না পেয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা পরীক্ষা শেষে নিশ্চিত হন লিমা আক্তারের পেটে রক্ত পরিষ্কার করার কাপড়ের টুকরো রয়েছে, দ্রুতই অস্ত্রোপচার করতে হবে বলে জানানো হয়।

গত ৩ জুলাই গভীর রাতে চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ. এইচ. এম.  শাখাওয়াত হোসেন দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপচার করে ওই নারীর পেট থেকে ১৮ ইঞ্চির একটি ‘মব’ কাপড়ের টুকরো বের করেন। বর্তমানে ভুক্তভোগী নারী ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ভুক্তভোগী নারীর বড় ভাই জহিরুল ইসলাম জানান, সিজার অস্ত্রোপচার করার পর তাঁর বোন মৃত্যু পথযাত্রী। পেটে ইনফেকশন হয়ে গেছে, এখনও পেট ফুলে আছে। দুর্গন্ধ বের হওয়াসহ ব্যথায় প্রতিনিয়ত কাতরাচ্ছে তাঁর বোন। দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপচারের আগে ও পরে মিলিয়ে ৫ দিন তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখতে হয়েছে। এখনও তাঁর বোন সংকটাপন্ন। শিশুটিও মায়ের সেবা এবং বুকের দুধ থেকে বঞ্চিত, ঝুঁকিতে আছে শিশুটিও। এ অবস্থায় পরিবারটি মানসিক ও আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

সিজারের সময় পেটে ১৮ ইঞ্চি কাপড় রেখেই সেলাই, সংকটাপন্ন প্রসূতি

আসাদুজ্জামান রিপন, নরসিংদী
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৬:০৬ পিএম

নরসিংদীতে মোসা. লিমা আক্তার (২৮) নামের এক প্রসূতির সিজারের সময় পেটের ভেতর ১৮ ইঞ্চির টুকরো মব কাপড় রেখেই সেলাই করে দিয়েছেন এক চিকিৎসক। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই নরসিংদীর সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

প্রসূতি লিমা আক্তার নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের দত্তেরগাঁও মির্জাকান্দি এলাকার রহিম মিয়ার স্ত্রী। লিমা আক্তার বর্তমানে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রসব ব্যথা ওঠার পর গত ১৭ জুন লিমা আক্তারকে নরসিংদী পৌর এলাকার বাসাইল এলাকায় অবস্থিত নরসিংদী সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন বিকেলে তাঁকে সিজারিয়ান অপারেশন করেন হাসপাতালটির চিকিৎসক শিউলি আক্তার। এ সময় লিমা এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। এরপর ২১ জুন দুপুরে লিমা আক্তারকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বাড়ি ফেরার পর তিনি পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। এ ঘটনার পর সিটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রতন মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেন ভুক্তভোগী নারীর ভাই জহিরুল ইসলাম।

এ অবস্থায় ২৫ জুন ভুক্তভোগী নারীকে পুনরায় একই হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। সেখানে কিছুই ধরা পড়েনি। পরে তাঁকে নরসিংদীর অপর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক লিমা আক্তারকে দ্রুত ঢাকার হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন এবং তাঁর পেটে একটা কিছু রয়েছে বলে ধারণা দেন।

এদিকে পরামর্শ অনুযায়ী স্বজনেরা রোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। সেখানে পর্যাপ্ত সেবা না পেয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা পরীক্ষা শেষে নিশ্চিত হন লিমা আক্তারের পেটে রক্ত পরিষ্কার করার কাপড়ের টুকরো রয়েছে, দ্রুতই অস্ত্রোপচার করতে হবে বলে জানানো হয়।

গত ৩ জুলাই গভীর রাতে চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ. এইচ. এম.  শাখাওয়াত হোসেন দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপচার করে ওই নারীর পেট থেকে ১৮ ইঞ্চির একটি ‘মব’ কাপড়ের টুকরো বের করেন। বর্তমানে ভুক্তভোগী নারী ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ভুক্তভোগী নারীর বড় ভাই জহিরুল ইসলাম জানান, সিজার অস্ত্রোপচার করার পর তাঁর বোন মৃত্যু পথযাত্রী। পেটে ইনফেকশন হয়ে গেছে, এখনও পেট ফুলে আছে। দুর্গন্ধ বের হওয়াসহ ব্যথায় প্রতিনিয়ত কাতরাচ্ছে তাঁর বোন। দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপচারের আগে ও পরে মিলিয়ে ৫ দিন তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখতে হয়েছে। এখনও তাঁর বোন সংকটাপন্ন। শিশুটিও মায়ের সেবা এবং বুকের দুধ থেকে বঞ্চিত, ঝুঁকিতে আছে শিশুটিও। এ অবস্থায় পরিবারটি মানসিক ও আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

জহিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে নরসিংদীর সিভিল সার্জন বরাবর অভিযোগ করেছি। বিএমডিসিতে অভিযোগ করব এবং পারিবারিক সিদ্ধান্তের পর মামলা করব। আমরা এরকম জঘন্যতম চিকিৎসার প্রতিকার চাই।’

যোগাযোগ করা হলে নরসিংদী সিটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রতন মিয়া বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জানার পর খোঁজ-খবর নিয়েছি। রোগীর বাড়িতেও গিয়েছি। দেড় লাখ টাকায় সমঝোতা করার চেষ্টা করেছি। তারা আরও অনেক বেশি টাকা চায়। ভুল করে ঘটনাটি হয়ে গেছে, সেটিতো আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আমরা রোগীর চিকিৎসার দায়িত্বও নেওয়ার কথা বলেছি।’

এ বিষয়ে নরসিংদীর সিভিল সার্জন সৈয়দ মো. আমিরুল হক শামীম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরকম জঘন্যরকম ভুল হতে পারে না। শুনেছি রোগী সংকটাপন্ন। রোগীর জীবন বিপন্ন করে তুলে এত বড় ময়লা পরিষ্কার করার ‘মব’ কাপড় পেটে রেখে সেলাই করে ফেলেন কীভাবে? এর প্রতিকার দরকার।’

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট